মাওলানা সাঈদী-মামুনুল হকের আলোচনা করায় বরখাস্ত মসজিদের ইমাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় শুক্রবার (৪ অক্টোবর) জুমার বয়ানে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মামুনুল হকসহ আলেম-ওলামাদের ওপরে আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনের কথা বলার কারণে চাকরি হারিয়েছেন মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. ওসমান গনি। তিনি উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের পীরগাছি জামে মসজিদের খতিব ও পেশ ইমাম ছিলেন।

শনিবার (৫ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাকে মৌখিকাভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

স্থানীয় মুসল্লিরা জানান, পীরগাছী জামে মসজিদে গত শুক্রবার খুতবায় সীরাত নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনার একপর্যায়ে যুগে যুগে নবী-রাসুল, পীর-মাশায়েখদের ওপর জুলুম নির্যাতনের বর্ণনায় মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী ও মামুনুল হকের কথা বলেন ইমাম। এই সময় কিছু মুসল্লি ইমাম সাহেবকে খুতবারত অবস্থায় অপমান অপদস্ত করেন। এমনকি কাউকে না জানিয়ে এক প্রকার অপমানজনকভাবে ইমামকে বরখাস্ত করা হয়।

মুসল্লিরা বলেন, কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নেওয়া দরকার ছিল। ইমাম সাহেবকে সসম্মানে বিদায় দেওয়া যেত। আমরা আলেম-ওলামাদের সম্মান দিতে চাই। খতিবকে সসম্মানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।

মসজিদ কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, হুজুর খুতবায় কোরআন-হাদিসের কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা মামুনুল হকের কথা বলায় মসজিদের আওয়ামী লীগপন্থি কিছু লোক হট্টগোল শুরু করে। এটা সামনের জুমায় বসে সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু কিছু লোক হুজুরকে রাখবে না বলে আমি হুজুরকে বুঝিয়ে তার বেতন দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি।

চাকরিচ্যুত ইমাম মাওলানা ওসমান গনি বলেন, রবিউল আওয়াল মাস ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে রাসুল (সা.) এর জীবনী নিয়ে আলোচনা করছিলাম। গত জুমায় আলোচনার বিষয় ছিল রাসুল (সা.) এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে। তার ধারাবাহিকতায় পবিত্র কোরআন ও হাদিস থেকে আলোচনা পেশ করেছি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মুসা (আ.) সহ একাধিক নবী-রাসুলের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, মুসা (আ.) দ্বিনের কাজ করতে গিয়ে অনেক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সুতরাং আপনিও জুলুম নির্যাতনের শিকার হবেন। তবে বিজয় আপনাদের হাতেই আসবে, যারা বিরোধিতা করবে ফেরাউনের বংশধরের মতো পরাজিত হবে। হযরত ইউসুফ (আ.)-কে নারী কেলেঙ্কারি দিয়ে ফাঁসানো হয়েছিল।

তিনি বলেন, উদাহারণ হিসেবে বলেছিলাম, যারা কোরআনের কথা বলবে তাদের ওপরে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। আল্লামা মামুনুল হকের ওপরে নারী কেলেঙ্কারির মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল এবং তাকে শহীদ করা হয়েছে। উদহারণ হিসেবে দুই আলেমের কথা বলায় তারা আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি সামনের জুমার নামাজে এসে নামাজ পড়িয়ে বিদায় নিতে চাইলেও সেই সুযোগ দেয়নি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *