অবশেষে কলাপাড়ায় অভিযুক্ত সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা; ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ন্যায়বিচারের দাবি

রাসেল মোল্লা, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: অবশেষে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীর পিতা মো. আনোয়ার মৃধা। শিক্ষক হাসানের চাহিদামত অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা না দেয়ায় বোর্ড পরীক্ষা দিতে পারেনি কারিগরী (ভকেশনাল) ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. সোহান আসাদুল মৃধা। উপজেলার ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভকেশনাল শাখা থেকে তার পরীক্ষায় অংগ্রহনের কথা ছিলো। কিন্তু অভিয্ক্তু শিক্ষক হাসান পার্শ্ববর্তী আমতলী উপজেলার টেপুরা আহম্মাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হওয়া স্বত্বেও তিনি ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভকেশনাল শাখা’র শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। তার প্রতারণার ফাঁদে পরে শিক্ষার্থী সোহানের জীবন থেকে ঝড়ে গেছে একটি বছর। প্রতিকার চেয়ে বুধবার (১২ নভেম্বর) ওই শিক্ষার্থীর পিতা মো. আনোয়ার মৃধা বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানের বিরুদ্ধে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং সিআর ১০৫৪/২০২৫। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক শিক্ষা অফিসারের উপর তদন্তভার প্রদান করেন।

মামলার বিবরনীতে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে। সে প¦ার্শবর্তী আমতলী উপজেলার টেপুরা আহম্মাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। তিনি অতিরিক্ত টাকা আয়ের জন্য ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভকেশনাল শাখা’র শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে নিজেকে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। বাদী আনোয়ার মৃধা গ্রামের সহজ সরল একজন কৃষক। ছেলে সোহানকে ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল থেকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য সকল ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করেন। অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানের কথামত বিদ্যালয়ে ভর্তী এবং রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সকল টাকা পয়সা প্রদান করেন। কিন্তু পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে ফরম পূরণের কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা দাবী করেন। শিক্ষকের চাহিদামত অতিরিক্ত টাকা বাদী দিতে অপারগ হলে তার ছেলে কিভাবে পরীক্ষায় দেয় সেটা দেখে নিবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকী দেখায়। পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষকের সেই হুমকী বাস্তবে রুপ নেয়। শিক্ষার্থী সোহান পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা হলে আসলেও অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান তাকে প্রবেশ পত্র প্রদান করেননি। ফলে পরীক্ষা দিতে না পেরে অশ্রুভরা চোখে বাড়ি ফিরতে হয়েছে হতদরিদ্র পিতার সন্তান শিক্ষার্থী সোহানকে। অবশেষে ন্যায় বিচারের দাবীতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিক্ষার্থীর পিতা মো. আনোয়ার মৃধা।

এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, মাত্র দশ হাজার টাকার জন্য একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারার ঘটনাটি অত্যান্ত দু:জনক। এবিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। তবে, তার হাতে এখনও মামলার কপি আসেনি। মামলার কপি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে রিপোর্ট প্রদান করবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *