শেখ হাসিনার পতনের জন্য দায়ী ‘গ্যাং অব ফোর’- ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। সাথে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা। তার এমন আকস্মিক পদত্যাগ ও পালানোর ঘটনায় হতভম্ব হয়ে পড়েন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা। তবে পালিয়ে থাকা এসব নেতাকর্মীরা এবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

পলাতক বেশ কিছু আওয়ামী লীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

তাদের একজন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের জন্য দলের অভ্যন্তরীণ একটি স্বার্থগোষ্ঠীকে দায়ী করে বলেছেন তিনি (হাসিনা) আমাদের কথা শুনতেন না, তিনি শুনতেন ‘গ্যাং অব ফোরে’র কথা। তারা তাকে বাস্তবতা বুঝতে দিতো না বলে অভিযোগ করেন।

‘গ্যাং অব ফোর’ কারা এমন প্রশ্ন করলে ওই নেতা বলেন, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

আওয়ামী লীগের ওই নেতা আরও বলেন, চারজনের এই দল তার (হাসিনা) পতনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই ব্যক্তিদের ওপর তার ছিল অন্ধবিশ্বাস। তার যে সহজাত রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ছিল, তা তিনি তাদের কারণে হারিয়ে ফেলেছিলেন।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দাবি করেছে, গত এক সপ্তাহে তারা আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে। সেসব বেশিরভাগ নেতারাই নাকি বলেছে, হাসিনা দল ও জনগণকে পরিত্যাগ করেছেন।

আরেক আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার বিষয়টি হাসিনার প্রত্যাখ্যান করা ছিল ‘সাংঘাতিক ভুল’। কেননা একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন বিএনপি নির্বাচনে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে বিরোধীদের রাগ-ক্ষোভ হয়তো মিটে যেত।

ওই নেতা আরও বলেন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, পুলিশের নিষ্ঠুরতায় জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা বুঝছিলাম। বিএনপিকে নির্বাচনে আনা গেলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানোও যেত। তাতে আমরাই আবার জিততে পারতাম এবং দল ক্ষমতায় থাকত।

হাসিনার দেশত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা আত্মগোপন করেছেন, কেউবা গ্রেফতার হয়েছেন। নেতারা বলছেন, ৫০ বছরের পুরনো যে দল টানা ১৫ বছরের বেশি দেশ শাসন করেছে, তারাই এখন অস্তিত্ব সংকটে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *