বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের তালিকা প্রকাশ; দৌড়ে অ্যাটকিনসন-কামিন্দু-সাইম-জোসেফ

২০২৪ সালে আইসিসির ছেলেদের বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কারের জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন চারজন। লড়াইয়ে থাকারা হলেন ইংল্যান্ডের গাস অ্যাটকিনসন, শ্রীলঙ্কার কামিন্দু মেন্ডিস, পাকিস্তানের সাইম আইয়ুব ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের শামার জোসেফ।

শনিবার নিজেদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এই সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী জানুয়ারির শেষদিকে বর্ষসেরার নাম ঘোষণা করা হবে। গণমাধ্যম প্রতিনিধি, আইসিসি ভোটিং একাডেমি ও সমর্থকদের ভোটে বেছে নেওয়া হবে বিজয়ীকে। আইসিসির ওয়েবসাইটে ভোট দিতে পারবেন সমর্থকরা।

গাস অ্যাটকিনসন (ইংল্যান্ড)

১১ টেস্টে ২২.১৫ গড়ে ৫২ উইকেট

গত জুলাইয়ে টেস্ট অভিষেকের পর এই সংস্করণে ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের মূল শক্তি হতে সময় নেননি অ্যাটকিনসন। লর্ডসে প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্ধর্ষ বোলিং পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরা হন তিনি। প্রথম ইনিংসে ৭ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেন। টেস্ট অভিষেকে ইতিহাসের চতুর্থ সেরা বোলিং ফিগারের কীর্তি তার দখলে (১০৬ রানে ১২ উইকেট)।

এই বছর ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি করে মোট ছয় টেস্টে ৩৪ উইকেট নেন অ্যাটকিনসন। বছরের শেষদিকে নিউজিল্যান্ড সফরে তিন টেস্টে ২৬ বছর বয়সী পেসারের ঝুলিতে যায় ১২ উইকেট। ২০০৮ সালের পর কিউইদের মাটিতে ইংল্যান্ডের প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি।

কামিন্দু মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)

তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩২ ম্যাচে ৫০.০৩ গড়ে ১৪৫১ রান

এই বছর শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপের নতুন স্তম্ভ হিসেবে আবির্ভূত হন কামিন্দু। টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় দ্রুততম ব্যাটার হিসেবে হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। মাত্র ১৩ ইনিংসে এক হাজারি ক্লাবে পৌঁছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যানের পাশে বসেন। মূলত সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বেশি উজ্জ্বল ছিলেন কামিন্দু। নয় টেস্টে ৭৪.৯২ গড়ে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৪৯ রান। পাঁচটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি তিনটি ফিফটি করেন তিনি।

ইংল্যান্ড সফরে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন ২৬ বছর বয়সী ব্যাটার কামিন্দু। তিন টেস্টে তিনি করেন ২৬৭ রান। ইংলিশদের মাটিতে দীর্ঘ এক দশক পর শ্রীলঙ্কার টেস্ট জয়ে বড় ভূমিকা ছিল তার।

সাইম আইয়ুব (পাকিস্তান)

নয় ওয়ানডেতে ৬৪.৩৭ গড়ে ৫১৫ রান

পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের টপ অর্ডারে নতুন তারকা সাইম। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই আলো ছড়ালেও নিজের সামর্থ্যের সেরাটা তিনি দেখান ওয়ানডেতে। অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পাকিস্তানের সিরিজ জয়ে তার পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া।

২২ বছর বয়সী ব্যাটার সাইম দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুটি সেঞ্চুরি করেন। প্রথমবারের মতো প্রোটিয়ারা নিজেদের মাটিতে কোনো ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার তেতো স্বাদ পায়। এর আগে দীর্ঘ ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের ওয়ানডে সিরিজ জয়েও সাইম ভালো করেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ৪.৬৩ ইকোনমিতে ৫ উইকেট নেন তিনি।

শামার জোসেফ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

আট টেস্টে ২৬.৭৫ গড়ে ২৯ উইকেট

এই বছরের শুরুতে দীর্ঘ ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের জয়ের নায়ক ছিলেন শামার। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫ বছর বয়সী পেসার ৬৮ রানে ৭ উইকেট শিকার করেন। ফলে সফরকারীরা পায় ৮ রানের নাটকীয় জয়। অভিষেক সিরিজে দুই টেস্টে সব মিলিয়ে ১৩ উইকেট নিয়ে শামার জেতেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এর মধ্যে দুবার নেন ইনিংসে অন্তত ৫ উইকেট।

গায়ানার নিভৃত গ্রাম থেকে উঠে এসে দ্রুত তারকাখ্যাতি পেয়ে যাওয়া শামার পরে ঘরের মাঠে ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে মোট তিন টেস্ট খেলে পান ১২ উইকেট।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *