‘ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার’: আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ

বৈষম্যহীন, জনবান্ধব ও কল্যাণমূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ চায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।

আজ শনিবার রাজধানীর পূর্ত ভবন মিলনায়তনে পরিষদ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কার: প্রেক্ষিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব সুপারিশ ও দাবি তুলে ধরা হয়।

পরবর্তীতে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাপারে জানানো হয়।

সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে—মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান, কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন অর্থাৎ ‘ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার’ এর বাস্তবায়ন, প্রশাসন ক্যাডারের ও অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনা, পদ আপগ্রেডেশন, পদোন্নতিতে সমান সুযোগ প্রদান, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সংশোধন ও পুনর্বিন্যাস, বিভিন্ন ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ইত্যাদি।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার গড়ে ওঠার পেছনে প্রশাসন ক্যাডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর যে গুলি চালানো হয়েছিল, তার নির্দেশদাতা ছিল প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। কারণ, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিতে পারে শুধুমাত্র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। তাদের নির্দেশেই যে গুলি চালানো হয়েছে, বিভিন্ন ভিডিওতে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই, তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

তারা আরও বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অথচ, সংবিধানের এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটা পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে অন্যান্য ক্যাডার সদস্যদের সাংবিধানিক অধিকার অনৈতিকভাবে হরণ করে চলেছে। মেধাবী সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে সকল ক্যাডারের উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উপসচিব হিসেবে নিয়োগের বিধান করতে হবে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষা ক্যাডারের সদস্য ড. মোহাম্মদ মফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রববানি,  সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট এম. এ. আজিজ, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. আব্দুস সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামানসহ কয়েকটি পেশাজীবী সংগঠনের নেতরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *