কলাপাড়ায় ধারের টাকা শোধ করতে ফুফুর যোগসাজশে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে!

রাসেল মোল্লা, কলাপাড়াঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়
ধারের ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ না করায় বাবা-মায়ের অজান্তে চল্লিশোর্ধ্ব শিপন হাওলাদারের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৩) বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রীর আপন ফুপু জাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে । ওই শিশু শিক্ষার্থীর বাড়ি উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের মধ্য টিয়াখালী গ্রামে। পাওনাদার শিপন হাওলাদারের বাড়ি বালিয়াতলী ইউনিয়নের লেমুপাড়া গ্রামে। বিষয় টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীসহ তার গোটা পরিবার এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন। কারণ ওই ছাত্রীকে জোর করে তুলে নেওয়ার জন্য তার ফুফু ও পাওনাদার শিপন দুই দফা হানা দিয়েছে। এ খবরে ভিকটিম শিশু শিক্ষার্থী আত্মহত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে শিশুটিকে নিয়ে তার পরিবার চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।

জানা গেছে, প্রায় ৪ মাস আগে শিশুটির বাবা নজরুল ইসলাম তার বোন জাহানারা বেগমের মাধ্যমে শিপনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। কিন্তু সময়মতো পরিশোধ করতে পারেনি বলে দাবি জাহানারার। ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে নজরুল ইসলাম এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে জাহানারা বেগম পাওনাদার শিপনকে নিয়ে এই চক্রান্ত শুরু করেন।

প্রায় এক মাস আগে ভাইয়ের মেয়ে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে জাহানারা বেগম প্রথমে লেমুপাড়া নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কলাপাড়া শহরের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে ভয়ভীতি দেখিয়ে শিপনের সঙ্গে কলেমা পড়িয়ে বিয়ে দেন। এর পরে শিশুটি বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনা বাবা-মায়ের কাছে খুলে বলে। ওই বয়স্ক শিপনের সঙ্গে জোর করে বিয়েতে বাধ্য করা হলে আত্মহত্যার হুমকি দেয় সে। এরপর সম্প্রতি পাওনাদার শিপন ও জাহানারা বেগম ওই শিশু শিক্ষার্থী কে তুলে নেওয়ার জন্য দুইদফা চেষ্টা চালায়। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধায় তা পন্ড হয়ে যায়।

শিশু টি জানায়, তাকে ভয় দেখিয়ে বিয়েতে বাধ্য করা হয়েছে। এরপর দুই বার জোর করে তুলে নিতে চাইলে সে পালিয়ে ছিল। তার মা খাদিজা বেগম জানান, ৫০ হাজার টাকা ননদের মাধ্যমে শিপনের কাছ থেকে তারা এক বছরের জন্য ধার নিয়েছেন। কিন্তু এমন ষড়যন্ত্র করবে তা বুঝতে পারি নাই। বউ-বাচ্চা থাকা সত্ত্বেও শিপন তার মেয়ের সর্বনাশ করার জন্য এমন অপকর্ম করেছে।

তবে জোর করে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিপন ও জাহানারা। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রবিউল ইসলাম বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *