নিউইয়র্ক প্রতিনিধিঃ নির্বাচনে কয়েক লাখ মানুষের শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিল : চার মার্কিন সিনেটর
বাংলাদেশ ইস্যুতে নীতি পরিবর্তনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে হোয়াইট হাউস। তারা বলেছে, বাংলাদেশের জনগণের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আকাক্সক্ষার সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনের সমন্বয়ক জন কিরবি। গত বুধবার এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউন‚সের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লংঘনের অভিযোগে কারাদÐের বিষয়ও উঠে আসে। ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব কি তা জানতে চান। ওই প্রশ্নের জবাবে কন কিরবি এ তথ্য জানান।
প্রশ্ন করা হয় নির্বাচনের আগে আপনারা ভিসানীতি ঘোষণা করেন। বাইডেন প্রশাসনের গণতন্ত্র বিকাশের চেষ্টা বাংলাদেশে সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়েছে বলে যে উদ্বেগ সামনে এসেছে, সে বিষয়ে আপনাদের প্রতিক্রিয়া কি? এ প্রশ্নের জবাবে জন কিরবি বলেন, আমরা স্পষ্টতই এখনও বিশ্বজুড়ে কার্যকর এবং গতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বের ওপর বিশ্বাস করি। বাংলাদেশি জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণের জন্য আমাদের চাওয়া বা আকাঙ্খার কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমাদের সেই আকাঙ্খার মধ্যে আছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রত্যাশা।
চার মার্কিন সিনেটর : এদিকে চার মার্কিন সিনেটর এক বিবৃতি বলেছেন, সহিংসতা ও বিরোধীদের ভয়ভীতি বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়াকেক্ষুন্ন করেছে। মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হুইপ ডিক ডারবিন, মার্কিন সিনেটর জেফ মার্কলি, টিম কেইন এবং পিটার ওয়েলচ এমন মন্তব্য করেছেন। গত বুধবার ডিক ডারবিনের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচনে কয়েক লাখ মানুষের শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণ থাকলেও সহিংসতা এবং বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে নির্বাচন এবং নির্বাচনপূর্ববর্তী প্রক্রিয়াক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করছেন চার মার্কিন সিনেটর। নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দলের অংশ না নেওয়ার বিষয়টিকেও দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন তারা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সদস্য এবং নাগরিক সমাজের কর্মীরা হয়রানির শিকার হয়েছেন, তাঁদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা নির্বাচন-পূর্ববর্তী প্রক্রিয়াকেক্ষুন্ন করেছে।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার বন্ধ করে গণতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিতের অঙ্গীকার পূরণ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিবৃতিতে আহŸান জানানো হয়েছে। মার্কিন সিনেটরেরা অর্থপূর্ণ সংলাপে বসার জন্য সব দলের প্রতি আহŸান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সব দলকে উদ্বুদ্ধ করছি, তারা যেন অর্থপূর্ণ সংলাপে বসে, সহিংসতা পরিহারের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনে।
নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং নাগরিক অধিকার চর্চার স্থানগুলোকে সুরক্ষিত রাখার ওপর বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয়েছে।