বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি জনসাধারণের জন্য মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে বাজার দর নিয়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এই অবস্থায় বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বৃদ্ধির ফলে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের অর্থনীতি। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে সব উপকরণের দাম আরে দফা বৃদ্ধি পাবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ায় জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে। সেই সাথে ডলার সংকট, এলসি খোলায় সমস্যার সাথে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে মাঝারি থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার উপক্রম হবে। তাছাড়া এর ফলে মূল্যস্ফীতি লাগাম টেনে ধরা কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। আর জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি এ খাতে লুটপাটের সুযোগ বাড়াবে।
গত দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার ও ভোক্তা পর্যায়ে ১৩ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ করে বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। এবার দাম বাড়তে পারে সাত থেকে আট শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বাড়তি দামের কারণে সব পণ্য উৎপাদনে খরচ আরো বাড়বে। ফলে এসব জিনিসের দাম আরো বাড়বে। একদিকে উৎপাদন খরচ এবং অন্যদিকে উৎপাদিত পণ্যটি ন্যায্য দামে বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের বেশ বেগ পেতে হবে, লোকসানও গুণতে হতে পারে। এসব কারণে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানার টিকে থাকা কষ্টকর হবে। ক্ষুদ্র কারখানাগুলো বন্ধের আশঙ্কাও রয়েছে।
গ্যাস-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, গণশুনানির পরিবর্তে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দামবৃদ্ধি জনগণের প্রতি অবিচার আর প্রতারণা। আর এভাবে ভোক্তার বোঝা বাড়িয়ে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে লুণ্ঠন করার সুযোগও তৈরি করে দিচ্ছে।