আসামের বিধানসভায় প্রায় ৯০ বছর ধরে চলা জুমার নামাজের জন্য নির্ধারিত দুই ঘণ্টার বিরতি বিজেপি সরকার বাতিল করেছে। বিধানসভার নিয়মাবলী কমিটি ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে এই সিদ্ধান্ত নেয়, যা চলতি বাজেট অধিবেশনে কার্যকর করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তে মুসলিম বিধায়করা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতা ও মুসলিম বিধায়কেরা এটিকে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাপট ও মুসলিম বিদ্বেষী নীতির বহিঃপ্রকাশ বলে অভিহিত করেছেন।
অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর বিধায়ক রফিকুল ইসলাম এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এটি চাপিয়ে দিয়েছে। বিধানসভায় প্রায় ৩০ জন মুসলিম বিধায়ক থাকলেও, তাদের ধর্মীয় অধিকার উপেক্ষা করা হয়েছে।”
বিরোধীদলীয় নেতা দেবব্রত শইকিয়া বলেন, “শুক্রবারের নামাজের জন্য বিধানসভার ভেতরেই ব্যবস্থা করা যেত, যাতে মুসলিম বিধায়কদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা মিস করতে না হয়। কিন্তু বিজেপি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে।”
বিধানসভার স্পিকার বিশ্বজিৎ দৈমারি বলেছেন, “সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে এই বিরতি বাতিল করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এটিকে “ঔপনিবেশিক প্রথা” বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন, “১৯৩৭ সালে মুসলিম লিগ নেতা সৈয়দ সাদুল্লার সময় এই নিয়ম চালু হয়েছিল, যা এখন বন্ধ করা হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এই বিরতি বাতিলের ফলে বিধানসভার কাজের গতি বাড়বে।”
আগে আসাম বিধানসভা সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯:৩০ থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এবং শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত। শুক্রবারের অধিবেশনে মুসলিম বিধায়কদের নামাজ পড়ার জন্য দুই ঘণ্টার বিরতি রাখা হতো। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বিধানসভার অধিবেশন প্রতিদিন সকাল ৯:৩০ থেকে বিরতিহীনভাবে চলবে, শুক্রবারেও এর ব্যতিক্রম হবে না।
সূত্র : মুসলিম মিরর