গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পাঞ্চল টঙ্গী, বোর্ড বাজার, গাজীপুর সদর, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, কালিয়াকৈর ও শ্রীপুর এলাকার বেশিরভাগ কারখানা কারখানা এখন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। কিছু কিছু কারখানা বন্ধও থাকছে গ্যাস সংকটের কারণে। আবার কিছু কারখানায় শ্রমিকরা আসলেও কাজ করতে পারছেন না। অলস সময় পার করছেন তারা। কারখানা মালিকরা পড়েছেন উভয় সংকটে। তারা বলছেন, গ্যাস সংকট থাকায় প্রতিদিন তাদেরকে লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) সরেজমিন দেখা যায়, টঙ্গী বিসিক এলাকার অধিকাংশ পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মুল ফটক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সময় এম্বি ফ্যাশন নামের এক কারখানার নিরাপত্তারক্ষী মো. আকবর আলীর সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই কারখানাটি দিনের বেলায় বন্ধ থাকে। তবে রাত ১০টা থেকে কার্যক্রম চালু হয়। দিনের বেলায় গ্যাসের চাপ অনেক কম থাকায় এই অবস্থা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুরের টঙ্গী বিসিকি এলাকার এবি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বদরুল হাসান তাসলিম বলেন, মাস ঘুরতেই শ্রমিকের বেতন-ভাতা গুনতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। গ্যাস সংকটের কারণে কারখানা গত চারদিন বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপর বিকল্প হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত খরচে সিএনজি ও ডিজেলের মাধ্যমে বয়লার এবং জেনারেটর চালু করা হয়েছে। গত এক-দেড় মাস ধরেই গ্যাস সংকটে কারখানা চলেছে নানা সংকটের মধ্যদিয়ে। যেখানে বয়লার চালাতে প্রয়োজন ১৯ হাজার ৯৬০ ঘন ফুট এবং জেনারেটর চালাতে লাগে ৯ হাজার ঘনফুট গ্যাস সেখানে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১ থেকে দেড় বা দুই পিএসআই। আবার অনেক সময় একেবারেই গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না।
গাজীপুর সদর বাসন এলাকার রয়েল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়হান আহমেদ হৃদয় বলেন, কারখানায় ৪ হাজারের অধিক শ্রমিক কাজ করেন। গত এক-দেড়মাস থেকে গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। এটি দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে। ক্রেতাদের অর্ডার সময়মতো পৌঁছে দিতে কয়েকগুণ বেশি খরচ করে ডিজেল এবং সিএনজি‘র মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থায় কারখানা চালু রাখা হয়েছে। এ কারণে প্রতি মাসে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধান না হলে গার্মেন্টস শিল্পে ভয়াবহ ধস নেমে আসবে।
শিল্পনগরীর টঙ্গী, বোর্ড বাজার, গাছা, বাসন, গাজীপুর সদর, কোনাবাড়ী, কাশিমপুর ও সফিপুর এলাকার এবিএম ফ্যাশন লিমিটেডের এজিএস এমডি মিলন, কেয়া স্পিনিং নিটিং এন্ড ড্রাইংয়ের জিএম (এডমিন) পরিমল বাবু, ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডের ম্যানেজার (এইচআর) মি. রেজা, গ্রুপের এজিএম ইউছুফসহ ওই এলাকার রিপন জিন্স এ্যারেল্স লিমিটেড, স্বাধীন গার্মেন্টস লিমিটেড, জিন্নাত অ্যাপারেলস (ডিবিএল), এমএম নিট অ্যাপারেলস লিমিটেড, নোভেলী গার্মেন্টস লিমিটেড, তুসুকা ডেনিম লিমিটেড, কটন ক্লাব (মণ্ডল গ্রুপ) লিমিটেড, ফ্যাশন পয়েন্ট লিমিটেড, মেডিট্রাক্স সোয়েটার লিমিটেড, সফিপুর পল্লি বিদ্যুৎ এলাকার ফারিস্ট, ইকো, এপেক্স, ডালাস, রহিম টেক্সটাইল ও কোনাবাড়ী বিসিক এলাকার বাজন অ্যাপারেলস, তমিজউদ্দিন, মাসরিকসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে গ্যাসের এমন তীব্র সংকটের চিত্র পাওয়া গেছে।