বেশ কয়েকমাস একই স্থানে অবস্থানের পর আবারও সরে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম হিমশৈলটি। বর্তমানে, আইসবার্গটি দক্ষিণ মহাসাগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে (বিএএস)-এর বিজ্ঞানীরা। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত আগস্ট মাসে পরিমাপের সময় দেখা যায়, আইসবার্গটি মোট ৩ হাজার ৬৭২ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। রোড আইল্যান্ডের চেয়ে সামান্য বড় ‘এ২৩-এ’ আইসবার্গটি। মূলত, ১৯৮৬ সালে ফিলচনার-রনে আইস শেল্ফ থেকে বাঁকানোর পর অব্দি এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সাবধানে এটিকে ট্র্যাক করেছেন।
‘এ২৩-এ’ আইসবার্গটি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অ্যান্টার্কটিকের ওয়েডেল সাগরের তলদেশে স্থির ছিল। এরপর সম্ভবতএটি সমুদ্রতলের ওপর আঁকড়ে ধরার স্থান যথেষ্ট পরিমাণে সঙ্কুচিত হওয়ায় নড়েচড়ে ওঠে আইসবার্গটি।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, যদিও এই নির্দিষ্ট বরফখণ্ডটি সম্ভবত প্রাকৃতিক বৃদ্ধি চক্রের অংশ হিসাবে ভেঙে গিয়েছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে কোন ধরনের অবদান রাখবে না। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আইসবার্গটির উদ্বেগজনক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন এই বিশাল, বিচ্ছিন্ন মহাদেশে উদ্বেগজনক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি সহ বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য।
জৈব-রসায়নবিদ লরা টেলর বলেন, ‘আমরা জানি যে এই দৈত্যাকার আইসবার্গগুলো যে জলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, সেখানে প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট সরবরাহ করতে পারে। ফলে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে’।
“আমরা আইসবার্গের আসেপাশে সমুদ্রের পৃষ্ঠের জলের নমুনা নিয়েছি । ‘এ২৩-এ’ আইসবার্গটির চারপাশে কী ধরনের জীবন তৈরি হতে পারে এবং কীভাবে এটি মহাসাগরে কার্বন এবং বায়ুমণ্ডলের সাথে এর ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে তা নির্ধারণ করতে কাজ চলছে। তবে, সবচেয়ে বড় আইসবার্গের অগ্রসর হওয়া পরিবেশের জন্য সুখকর সংবাদ নয়।