ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এইচপিভি বা জরায়ুমুখের ক্যান্সাররোধের টিকা নিয়ে অসুস্থ হয়ে ৬২ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা সবাই ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ে টিকা কার্যক্রম চলাকালে এমন ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসকদের দাবি, এটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। তাই ভয়ের কোন কারণ নেই। অন্যদিকে এ ঘটনায় একটি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই বিদ্যালয়ে এইচপিভি বা জরায়ুমুখের ক্যান্সাররোধে টিকাদান চলছিল। ওই সময় অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী টিকা নেয়ার আগেই ইনজেকশনের সুই দেখে ভয়ে পান। পরে তাকে টিকা দেয়া হলে অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করেন। কখনও চিৎকার আবার কখনও নিজের মাথার চুল নিজেই টানতে দেখা যায় তাকে।
অসুস্থ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জানান, প্রথমে যিনি অসুস্থ হয়ে পরেন তার টিকা নেয়ার পরে অসুস্থতা দেখে অন্যান্যরাও অসুস্থ বোধ করেন। কেউ কেউ বাড়ি গিয়ে অসুস্থতা বোধ হয়ে আবার হাসপাতলে ভর্তি হয়েছেন। প্রচন্ড মাথায় ব্যথার কারণে ভুক্তভোগীরা চিৎকার ও নিজের মাথার চুল টানাটানি করেন বলেও জানান শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
এ ঘটনায় জ্ঞানদা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, একজন অসুস্থ হওয়ার কিছুক্ষণ পর অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও এমন আচরণ করতে থাকেন। এরপর টিকা প্রদান বন্ধ করে অসুস্থ ৬ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থীদের নিয়ে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে একে একে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ৬২ জন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে টিকা না নিয়েই অসুস্থ হয়ে অন্তত তিন জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এমন ঘটনা টিকা প্রদানের ফলে হয়নি দাবি করে চিকিৎসক জানান, এটি গণমনস্তাত্ত্বিক রোগ। এক জনের দেখাদেখি অন্যজন একইভাবে আচরণ করে থাকেন। এমন অবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই রোগীরা সুস্থ হয়ে যান। অসুস্থ রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।