পটুয়াখালী প্রতিনিধি : রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনায় নিহত জুয়েল রানা গাজী (৩০) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম মধুখালী গ্রামের ইসমাইল গাজীর ছেলে।
হতভাগা জীবন বাঁচাতে সাত তলা থেকে নামতে গিয়ে জানালার পাশে এসির ওপর দাঁড়ায়। এসময় নিচে পড়ে গিয়ে মারা যান জুয়েল। জুয়েলের ভাইগ্না রাকিব এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওই ভবনে এমবাসিয়া নামের একটি খাবারের দোকানে জুয়েল কাজ করতেন। জুয়েলের মা—বাবা ছাড়াও এক ভাই, তিন বোন এবং জুয়েলের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা, ছয় বছরের মেয়ে তাসনিয়া ও তিন বছরের ছেলে তাইফুর রয়েছে। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। শ্রমজীবী পরিবারের ছেলে জুয়েল ও বড় ভাই আলআমিন ঢাকায় কাজ করতেন।
প্রায় তিন বছর আগে জুয়েল ঢাকায় যান। মাঝখানে করোনার ধকলে বেকার ছিলেন। পড়শি মতিউর রহমান জানান, ওরা ছাদে ছিল। নিচে আগুন দেখে নামার জন্য জীবন বাঁচাতে জুয়েল রানা ভাইগ্না রাকিবসহ একজন বাবুর্চি জানালা ভেঙে ওয়াই—ফাইসহ ডিশের বিভিন্ন তার ধরে নিচে নামার পরিকল্পনা করে। প্রথমে রাকিব নিচে নামতে সক্ষম হয়। পরে ওই বাবুর্চি নামেন।
এরপর নামার জন্য জুয়েল এসির ওপরে দাঁড়ালে সেটি ভেঙ্গে পড়ে যায়। তার শরীর দুমড়ে—মুচড়ে গেছে। দরিদ্র সংসারে নিহত জুয়েলের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল ছিল পরিবারটি। জুয়েলের মরদেহ শুক্রবার শেষ বিকেলে কলাপাড়ায় নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ ঘটে।
এলাকার শত শত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করে। সন্ধ্যা ছয় টায় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে জুয়েলকে দাফন করা হয়। এর আগে কলাপাড়ার ইউএনও মো. জাহাঙ্গির হোসেন নিহত জুয়েলের বাড়ি গিয়ে তার বাবা ইসমাইল গাজীর কাছে সরকারের দেয়া ২৫ হাজার টাকার চেক ও নিজ উদ্যোগে নগদ ৫ হাজার টাকা হস্তান্তর করেন এবং পরিবারকে সকল ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।