জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অভিযুক্তদের নামে মামলা করার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করাসহ অন্যান্য দাবি জানান তারা।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ৬ জনার মধ্যে ঘটনার মূলহোতাসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আলোচিত এই ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে এদিন (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালেই আটক করে পুলিশ।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তবে ঘটনার পরেই তাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
মোস্তাফিজ ছাড়াও আটককৃত বাকি তিনজন হলেন– সাব্বির হাসান সাগর, সাগর সিদ্দিকী ও হাসানুজ্জামান। এরাও জাবির বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচের শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার এএসপি কাফী।
ঘটনার মূল হোতাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করার অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডির সহযোগীতায় তাদেরকে আটক করা হয় বলে জানান কাফী। এছাড়া, ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আরও দুজনকে ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে, শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের পাশের বোটানিক্যাল নামক জঙ্গলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ঐ দম্পতিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেড়ানোর কথা বলে ডেকে আনে মামুন। এক পর্যায়ে কৌশলে ভুক্তভোগীর স্বামীকে মীর মশাররফ হোসেন হলের A ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটকে রাখে।
পরে ভুক্তভোগীকে স্বামীর কাছে নেয়ার কথা বলে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
এ ঘটনা জানাজানির পর শিক্ষার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে গতকাল রাতেই বিক্ষোভ শুরু করে। পরবর্তীতে আজ দুপুরে আবারও ক্যাম্পাসে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ধর্ষকের বিচার চেয়ে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ডও দেখা যায়।