রমজানের বাকি নেই আর দুই মাসও। তার আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডালের দাম। ঢাকার যেকোনো বাজারে গিয়ে এখন বিদেশি মসুর ডাল কিনলেই কেজিতে গুনতে হবে ১৩০ টাকা। পাড়া-মহল্লার দোকানে দাম আরও বেশি। গত একমাসে লাফিয়ে চড়েছে মুগ ডালের বাজারও।
এর কারণ খুঁজতে যাওয়া হয় পুরান ঢাকার ডালপট্টিতে। এখান থেকেই রাজধানী ও আশপাশের জেলায় ডালের বড় যোগান যায়। বড় মিল থেকে তো বটেই, ডাল আমদানি করে নিজস্ব মেশিনে ভাঙিয়ে বিক্রি করেন এখানকার অনেক ব্যবসায়ী।
রোজার আগে সাধারণত সেখানে দম ফেলার ফুরসত থাকে না। কিন্তু এবার দৃশ্য উল্টো। জানা গেলো ভারত, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ডাল আমদানি কমে গেছে। যদিও অন্যান্যবার রোজার সময় দ্বিগুণ পরিমাণ ডাল সংগ্রহ থাকতো ব্যবসায়ীদের। কেননা, ক্রেতারা রমজান এলেই একত্রে অনেক পণ্য কেনাকাটা করেন। কিন্তু এবার তা করা যাবে কি না সন্দিহান ব্যবসায়ীরা। কেননা, প্রায় সব ডালের ক্ষেত্রে আমদানিতে প্রায় ৩০-৪০ টাকা বেড়েছে। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে ব্যাংকে এলসি খোলার জটিলতাও।
কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, দেশীয় ডালের মজুদ নেই এখন। তাই দাম বেড়ে গেছে। নতুন ফসল এলে দাম কমবে। গত বছর এই সময়ে দেশি মসুর ডালের মূল্য ছিল ৯৮-১০০ টাকা। বর্তমানে তা ১৩০ টাকার বেশি।
এ অবস্থায় ডাল ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, রোজার চাপ সামাল দিতে চাইলে এখনই বড় পরিসরে আমদানির সুযোগ দিতে হবে।
চকবাজার ডালপট্টি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান বলেন, এলসি যেগুলো দেয়া হয়েছে, সেগুলোও ডলার সঙ্কটে ক্লিয়ার করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় আমরা কী করবো? সরকার যদি রোজায় কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে সঙ্কট হওয়াটা স্বাভাবিক।
যদিও হতাশ নন আমদানিকারকরা। জানালেন, ভারত মাঝে অন্য দেশের ডাল এনে সরবরাহ করলেও এখন নিজস্ব উৎপাদন বাড়িয়েছে। কিন্তু এলসি নিয়ে বিপত্তি থামছেই না।
সিএন্ডএফ এজেন্ট ও আমদানিকারক রাশেদ ইসলাম বলেন, প্রতি মেট্রিক টন ডাল ১ হাজার ডলারে অ্যাসেসমেন্ট হয়। কেউ ৯৫০ বা ৯০০ ডলারেও করছে। ডালের গুণাগুণ অনুযায়ী।
ডাল আমদানিকারক ললিত কেশারা বলেন, ফেব্রুয়ারির ১৫-২০ তারিখের দিকে ভারতে মসুর ডাল, ছোলার ফলন আসবে। আশা করি, তখন দাম কমবে।
উল্লেখ্য, মসুর, মুগ, খেসারি, ছোলা, ডাবলি মিলিয়ে বর্তমানে দেশে ডালের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন।