মালয়েশিয়ার নতুন রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন সুলতান ইব্রাহিম। তিনি মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ জোহোরের সুলতান ছিলেন। ফলে মালয়েশিয়ার ১৭তম রাজা হিসেবে অভিষেক ঘটলো তার।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানী কুয়ালালামপুরে শপথ নিয়েছেন তিনি। অভিষেক অনুষ্ঠানও হয়েছে সেখানেই। আগামী ৫ বছর এই পদে থাকবেন সুলতান ইব্রাহিম।
জোহোরের সালতানাত পরিচালনার পাশপাশি সুলতান ইব্রাহিম মালয়েশিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যেও একজন। রিয়েল এস্টেট, খনিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসা রয়েছে তার। সুশাসনে আস্থাশীল সুলতান ইব্রাহিমের সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সম্পর্কও বেশ ভালো।
দামী গাড়ি ও মোটরবাইকের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে সুলতান ইব্রাহিমের। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে বেশ কিছু দামী গাড়ি ও মোটরবাইক রয়েছে। স্পষ্টভাষী বক্তা হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে তার।
৬৫ বছর বয়স্ক সুলতান ইব্রাহিম যে রাজপরিবার থেকে এসেছেন, সেটি ১৬ শতক থেকে জোহর প্রদেশে ক্ষমতাসীন রয়েছে। এই প্রদেশটি একসময় স্বাধীন ছিল। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভের ৯ বছর পর ১৯৫৭ সালে মালয়েশিয়া কনফেডারেশনে যোগ দেয় জোহর।
বস্তুত, মালয়েশিয়ার ১৩টি প্রদেশের মধ্যে জোহরই একমাত্র প্রদেশ, যেটির নিজস্ব সেনাবাহিনী রয়েছে। ১৯৫৭ সালে মালয়েশিয়ায় যোগ দেওয়ার সময়ই এ ইস্যুতে সমঝোতা করে নিয়েছিল জোহর।
দেশটির ১৩টি প্রদেশের ৯টির প্রত্যেকটিতে এক একটি প্রাচীন রাজনৈতিক পরিবার রয়েছে। এসব পরিবার থেকেই চক্রাকারে প্রতি পাঁচ বছরের জন্য বেছে নেওয়া হয় রাজা। প্রত্যেক পরিবারের সর্বজ্যেষ্ঠ সদস্য এই পদে আসীন হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এই প্রথা চালু রয়েছে দেশটিতে। মালয়েশিয়ার রাজতন্ত্রকে বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম রাজতন্ত্র বলে গণ্য করা হয়।
মালয়েশিয়ায় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রচলিত এবং দেশটির সরকারের ধরণ ওয়েস্টমিনিস্টার বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত। মন্ত্রিপরিষদ ধাঁচের সরকারে রাষ্ট্রপতির যে ভূমিকা থাকে, মালয়েশিয়ায় রাজার ভূমিকাও অনেকটা তেমনই অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চলতে থাকার কারণে রাজার ভূমিকা দিন দিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে এ দেশে।