বিপিএলে মানেই যেন বিতর্ক। হ-য-ব-রল অবস্থার মাঝেই প্রতি মৌসুমে মাঠে গড়ায় টুর্নামেন্ট। নেই কোন ব্রান্ডিং, থাকে না প্রচার। সেখানে এই ছবিটা যেন দিনবদলের বার্তা। বিপিএলের ১০ম আসরে এসে ট্রফি হাতে ফটোসেশনের আয়োজন। দেশের মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠ র সামনে ট্রফি হাতে দাঁড়িয়ে সাত দলের সাতজন খেলোয়াড়।
কিন্তু ট্রফি হাতে সাত অধিনায়ক দাড়িয়ে -এমন ভাবলে কিন্তু ভুল করবেন। ট্রফি হাতে অধিনায়ক পোজ দেবেন সেটা স্বাভাবিক হলেও এটা যে বিপিএল। টুর্নামেন্টের দু’দিন আগে অধিকাংশ দল জানিয়েছিলো কে হচ্ছেন কার অধিনায়ক। সিলেট স্টাইকার্সের হয়ে মোহাম্মদ মিঠুন ট্রফি হাতে থাকলেও, তিনি কিন্তু দলটির অধিনায়ক নন।
কেন এমন অবস্থা? বিপিএলের পৃষ্ঠপোষকদের আনুষ্ঠানিকভাব পরিচয় করিয়ে দেয়ার অনুষ্ঠানে এসে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি কর্তারা। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী বলেন, তাদের (ফ্র্যাঞ্চাইজি) হয়তো সীমাবদ্ধতা ছিল তাই তাদের অধিনায়ক বা দলের নাম দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলন যখন চলছিলো তখনই প্রথমবার সিলেটের অনুশীলনে যোগ দেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এরপরেই তাকে অধিনায়ক ঘোষণা করে দলটি। আর সেই মিঠুন সহ অধিনায়ক। শুধু অধিনায়ক না, দলগুলোর নাম এতবার বদল হয় তাতে কারো পক্ষে মনে রাখাই যে দায়। এই যেমন দুরন্ত নাকি দুর্দান্ত ঢাকা সেটা মনে করাই কঠিন। হবেই বা; না কেন। গেল দশ আসরে এপর্যন্ত ২৭ ফ্রাঞ্জাইজি এসেছে বিপিএলে। আর্থিক কাঠামো দূর্বল বলেই বাই বাই বলেছেন বেশিরভাগ। ফ্রাঞ্জাইজিরা বার বার টুর্নামেন্টের লভ্যাংশের শেয়ার দাবি করলেও, বিসিবি বলছে ভিন্ন কথা।
এ প্রসঙ্গে নিজামউদ্দীন চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা একটি টেকসই বিপিএল করতে চাচ্ছি। সেটা শুধু ক্রিকেট বোর্ডের জন্য নয়, এটা সব ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্যও। যে সমস্ত লভ্যাংশ ভাগের মডেলকে উদাহরণ হিসেবে আনা হচ্ছে, সেই লীগগুলোতে কিন্তু ফ্যাঞ্চাইজি ফিস বলেন বা অন্যান্য আর্থিক কাঠামো অনেক উপরে। তারা যে মডেলে করছে আমরা সেই মডেলে যাচ্ছি না আর সেটা আমাদের জন্য টেকসই হবে না ফ্যাঞ্চাইজি ফি’সহ আর্থিক দিক বিবেচনায়। সেক্ষেত্রে এটা তুলনা যোগ্য নয়। আমরা আমাদের বাজার ও সীমাবদ্ধতা অনুযায়ী এটা করি। এ বিষয়ে লভ্যাংশ ভাগে বোর্ডের আগে যে অবস্থান ছিল এখনও সেটাই।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত লভ্যাংশ ভাগের যে মডেল, আমরা ওভাবে যাচ্ছি না, চিন্তাও করতে পারছি না বর্তমান প্রেক্ষাপটে। এর বাইরে গেলে আমাদের জন্য বিষয়টা সামলানো কঠিন হবে। আমার মনে হয় আমরা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে আলাদা করে বসলে তাদের বোঝাতে সক্ষম হব যে, আমরা কি মডেল করছি আর অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগগুলো কি মডেলে হচ্ছে। এটা হলে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে আসতে পারবে।
যদিও এমন অবস্থার পরো দেশের সবচে বড় ব্রান্ড ক্রিকেটের জন্য এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। নানা কারণে ব্রান্ডিং এ বিপিএল পিছিয়ে পড়লেও সবার প্রত্যাশা একটায় মাঠের ক্রিকেটের জমাট লড়াই ছাপিয়ে যাবে সব কিছু।