বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে কোনো ভোটে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল বিএনপি। তাই আসছে ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না দলটি। সরকার পদত্যাগের একদফা আন্দোলনেই মনোযোগ তাদের। তবে প্রতীক ছাড়া দলের কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে নমনীয় নাকি কঠোর হবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি। তৃণমূলের অনেকে ভোটে যেতে আগ্রহী বলে নীতিনির্ধারকদের জানিয়েছেন। সে বিবেচনায় স্বতন্ত্রভাবে কেউ অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে দল নমনীয় হতে পারে। বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপিসহ নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত ৬৩টি রাজনৈতিক দল। তারা দলীয় সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হয় না বলে দাবি করে আসছে। তবে এর মধ্যে ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল আবার স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি নেতারা জানান, তারা বর্তমান সরকারকে অবৈধ বলছেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু ভোট আশা করেন না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে অংশ নেননি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করেছেন। এমন অবস্থায় কোনো নির্বাচনেই যাওয়ার সুযোগ নেই। সরকারের পদত্যাগসহ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারা আন্দোলন করছেন। যা অব্যাহত থাকবে। তবে নেতারা এও স্বীকার করেন, তৃণমূলের একটি অংশ উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। এখন প্রতীক ছাড়া কেউ নির্বাচনে গেলে কি ধরনের পদক্ষেপ নেবে, তা নীতিনির্ধারকরা ঠিক করবেন। অন্যদিকে নিবন্ধন বাতিলের পর থেকে জামায়াতে ইসলামী প্রতীকবিহীন দল। একটি সূত্র জানায়, তাদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ভোট করার কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু ময়মনসিংহ সিটির কয়েকটি কাউন্সিলর পদে ভোট করতে পারে। এছাড়া বেশ কয়েকটি উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত দলটি ভোটে যাওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে তৃণমূলের সঙ্গে বৈঠক করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আর ইসলামী আন্দোলনও ভোটে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত।
উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক তুলে দেওয়া প্রসঙ্গে মঙ্গলবার এক সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের ৭ জানুয়ারির পর সোমবার দ্বিতীয় পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিজেরা পরাজয় স্বীকার করে নিজেরাই নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে। তারা এখন নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে না। এটা তাদের আতস্বীকৃত পরাজয়। মুখে হুমকি-ধমকি যা-ই দেখাক না কেন আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে, দেশের মানুষ নৌকা প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগের বাড়াবাড়ি এখন ধোপে টিকছে না।’