লোকসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক রাজ্য সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ফুট উচ্চতায় তৈরি ‘সেলা টানেল’ উদ্বোধনে গত শনিবার যান অরুণাচলে।
দীর্ঘদিন ধরেই, অরুণাচল নিয়ে চলছে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব। ভারতের এই রাজ্যটিকে নিজেদের দাবি করে চীন। এমনকি বেইজিং অরুণাচলের বিভিন্ন এলাকার নিজস্ব নামও দিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ কয়েকবার সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে দেশ দুটির মধ্যে। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অরুণাচলকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ দাবি করা চীন, অঞ্চলটিতে ভারতীয় নেতাদের সফরে বরাবরই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মোদির সফরের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ক্ষোভ ঝেড়েছে বিরোধপূর্ণ এলাকায় নয়াদিল্লির উন্নয়ন কর্মাকাণ্ডেরও।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, দক্ষিণ তিব্বত অঞ্চল চীনের ভূখণ্ড। ভারত কর্তৃক অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশকে চীন সরকার কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি। চীন-ভারত সীমান্ত সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। কাজেই চীনের দক্ষিণ তিব্বত অঞ্চলে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনার অধিকার নেই ভারতের। ভারতের এ ধরণের কর্মকাণ্ড সীমান্ত সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলবে। বিরোধপূর্ণ এলাকায় ভারতীয় নেতার তৎপরতায় চীন তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করছে।
এদিকে, পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ভারত। মোদির অরুণাচল সফর নিয়ে চীনের অবস্থানকে অযৌক্তিক দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জস্বওয়াল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অরুণাচল সফর নিয়ে চীনের মন্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। ভারতীয় নেতাদের অরুণাচল সফরের বিরোধিতা করার কোনো যৌক্তিকতাই চীনের নেই। অন্যান্য প্রদেশে ভারতীয় নেতারা যেমন যান, ঠিক সেভাবে অরুণাচলেও যান। সেখানে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিরোধিতার কোনো কারণই চীনের থাকতে পারে না। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এবং থাকবে।
ভারতের দাবি, অরুণাচলের এই টানেলই বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুই লেনের টানেল। বলা হচ্ছে এর ফলে চীন সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয় সেনা ও সমরাস্ত্র মোতায়েন সহজ হবে।