কুমিল্লা সিটি করপোরেশেনে মেয়র পদে উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন তাহসীন বাহার সূচনা। বাস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে ১০৫ কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৮৯০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি কুমিল্লা সিটির সাবেক মেয়র ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল হক সাক্কু ২৬ হাজার ৮৯৭ ভোট পেয়েছেন।
ভোট গণনা শেষে শনিবার (৯ মার্চ) রাতে তাহসীন বাহার সূচনাকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন। এর মধ্য দিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রথমবারের মতো কোনো নগরমাতা পেলো। আর তাহসীন বাহার সূচনা দেশের তৃতীয় কোনো নারী, যিনি সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারে বসতে যাচ্ছেন।
এর আগে, আজ সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ইভিএমে এই সিটির উপনির্বাচনে ভোট নেয়া হয়। ভোটগ্রহণের পরপরই শুরু হয় গণনা।
ভোটের ফলে তৃতীয় হওয়া মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন কায়সার ১৩ হাজার ১৫৫ ভোট পেয়েছেন। তিনিও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর উর রহমান পেয়েছেন ৫ হাজার ১৭৩ ভোট।
বিজয়ী তাহসীন বাহার সূচনা কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। একইসঙ্গে মহানগর আওয়ামী মহিলা লীগের যুগ্ম সম্পাদকও। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা-৬ (আদর্শ সদর) আসনের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে। এই নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে সমর্থন দেয়।
এর আগে, ২০২২ সালের ১৫ জুনে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটির নির্বাচনে বাহারের সমর্থনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক। ওই নির্বাচনে আরফানুল হকের কাছে মাত্র ৩৪৩ ভোটে হেরেছিলেন মনিরুল হক সাক্কু। তাতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সাক্কু যুগের অবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ আমলে এই সিটির প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র হয়ে চমক দেখিয়েছিলেন সাক্কু। তৃতীয় নির্বাচনে এসে তার পরাজয়ের জন্য দায়ী করা হয় বাহারকে।
সাক্কু যুগের অবসান ঘটিয়ে মেয়রের দায়িত্ব নিয়ে দেড় বছরের মাথায় গত ডিসেম্বরে মারা যান আরফানুল হক রিফাত। যে কারণে কুমিল্লায় মেয়র পদে আজ শনিবার উপনির্বাচন হয়। এই সিটিতে এবারের ভোটে মেয়ে সূচনাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করান বাহার। তাকে স্থানীয় আওয়ামী লীগও সমর্থন দেয়। ভোটের ফলে সূচনা হাসলে ফের আবারও কুমিল্লা শহরে ভোটের রাজনীতিতে স্পষ্ট হয় ‘বাহার চমক’।
এই সিটিতে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন। আর ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৫টি। মোট ভোট পড়েছে ৩৮ দশমিক ৮২ শতাংশ।