রাসেল মোল্লা,কলাপাড়াঃ চলমান উচ্চমূল্যের বাজারে গরুর মাংস কিনতে সাহস পান না নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারসহ অতি সাধারণ মানুষ। আর এসব পরিবারে গরুর মাংস ক্রয় করা যেন বিলাসিতা। তবে জিভের খোরাক মেটাতে স্বাদযুক্ত গরুর মাংস কম দামে কিনতে কে না চায়! আর তা যদি পাওয়া যায় মাত্র ২০০ টাকায়- এমন সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইবে না অনেকেই। তাও রান্নার উপকরণসহ সাধ্যের মধ্যে কম্বো প্যাকেজে।
সাধারণ মানুষের জন্য ঠিক এমন সব চিন্তা-ভাবনা নিয়ে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় চালু করা হয়েছে মাত্র ২০০ টাকায় গরুর মাংসের কম্বো প্যাকেজ। আর এতে হাসি ফুটেছে স্বল্প আয়ের মানুষের মুখে।
শুক্রবার সকালে কলাপাড়া পৌর শহরের কৃষক বাজারে এই প্যাকেজের উদ্বোধন করে উপজেলা প্রশাসন। ফলে সকাল থেকে হাসি মুখে মাংস ক্রয় করছেন সব শ্রেণির মানুষ। আর এই হাটেই সবজি বিক্রি করে সস্তায় গরুর মাংস কিনতে পারছেন বলে দারুণ খুশি প্রান্তিক চাষিরা।
প্যাকেজে থাকছে ৩ পিস আলু, কিছু কাঁচা মরিচ আর ৩ পিস পেঁয়াজ।
সরেজমিনে কথা হয় নীলগঞ্জ থেকে তরকারি বিক্রি করতে আসা সালামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকালে লাউসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে এসেছিলাম টোল ফ্রি হাটে। এরমধ্যে অধিকাংশ সবজি বিক্রি হয়েছে। এখন ৩৫০ টাকায় ৫০০ গ্রাম গরুর মাংস কিনে রেখেছি। সবজি বিক্রি শেষ হলে পরিবারের জন্য মাংস নিয়ে ঘরে ফিরব।
এই হাটের ক্রেতা রাজীব মোল্লা বলেন, সবজি কিনতে এসে কম্বো প্যাকেজ দেখে অবাক হয়েছি। ৩ পিস আলু, কিছু কাঁচা মরিচ আর ৩ পিস পেঁয়াজসহ মাত্র ২০০ টাকায় একটা মাংসের প্যাকেজ নিয়েছি। যদিও আমার বাজেট কম ছিল, কিন্ত সাধ্যের মধ্যে পেয়ে একটা প্যাকেজ নিয়েছি।
রিকশাচালক সুমন জানান, এই বাজারে কম দামে সবজি কিনতে পাওয়া যায় বলে এখান থেকেই কয়েকদিন ধরে তরকারি কিনছি। কিন্তু আজ ২০০ টাকায় মাংস পেয়ে এক প্যাকেজ নিয়েছি। এভাবে পেলে তো আমরা গরিবরা গরুর মাংস কিনতে পারব। কারণ, অনেক সময় সাধ থাকলেও অল্প মাংস কিনতে গিয়ে দোকানে লজ্জায় বলতে পারি না। এখন আমার মতো অনেকেই কিনতে পারবে।
কলাপাড়ার ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ক্রেতাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে মূলত এই মাংসের কম্বো প্যাকেজ চালু করা হয়। ছোট পরিবার, ব্যাচেলর কিংবা কম আয়ের মানুষ সুবিধাটি নিতে পারছেন। অনেকেই এই প্যাকেজ চালু হওয়ায় খুশি। ২০০ টাকায় আলু, পেঁয়াজ ও মরিচসহ মাংস নিতে পারছেন। আর ৩৫০ টাকায় ৫০০ গ্রাম মাংস নিতে পারছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি আরো বলেন, আজ প্রথম দিন ১০০ কেজির প্যাকেজ ছিল। সিংহভাগ বিক্রি হয়ে গেছে। তবে মাংস বাজারের চেয়ে কেজি প্রতি কম মূল্যে পাচ্ছেন অনেক ক্রেতাই। এছাড়া যাদের একবারেই কেনার মতো অর্থ নেই, তাদের জন্য এই হাটে সবজির ডোনেট বক্স চালু করা হয়েছে জানান তিনি।