পর্দা নামলো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসরের। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫ টায় মাসব্যাপী চলা এই মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মেলার স্থায়ী ভেন্যু ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে’র মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত সমাপনী অনুষ্ঠানে বানিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম (টিটু) এ ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী এবার হস্ত শিল্পকে বর্ষসেরা পণ্য হিসেবে ঘোষনা দিয়েছেন জানিয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, হস্ত শিল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আগামী বছর আলাদা প্যাভিলিয়নের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, বাণিজ্য মেলার মাধ্যমে পোশাক শিল্পের পাশাপাশি, লেদার, জুট, ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বক্তব্যে, মেলার এ বছর যা ভুল হয়েছে তা শুধরিয়ে আগামীতে আরও সুন্দর মেলা উপহার দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, ২৩ দেশের ব্যবসায়ীরা যাতে মেলায় আসে সে বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হবে। যাতে করে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দেশের পণ্য আরাও প্রসার হয়। এদেশের পণ্য রফতানি ঘটিয়ে ১০০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য পূরন করার কথাও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বানিজ্য সচিব বলেন, মাসব্যাপী মেলায় বিদেশী ব্যবসায়ীরা আসতে চাননা। তাই, তারা চিন্তা করছেন আগামীতে ঢাকা বাণিজ্য মেলা নাম দিয়ে ৫ দিনের ভিন্ন একটি আন্তর্জাতিক মেলা আয়োজনের। এ সময় এফবিবিসিসিআই এর সভাপতি মাহবুবুল আলম তার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে এফবিবিসিসিআই এর সার্বিক সহযোগীতা ও পার্টনারশীপের প্রস্তাব দেন।
মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করে আয়োজকেরা জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু না হলেও এবার জনগণের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। গতবারের চেয়ে ১৫ শতাংশ বিক্রি বেড়ে এবার পণ্য বেচা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার। তাছাড়া গতবারের চেয়ে ১৭.২৫% রফতানী আদেশ বেড়ে এবারের মেলা থেকে বিদেশী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রফতানী আদেশ এসেছে ৩৯১ কোটি ৮২ লাখ টাকার।
এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্টুরেন্ট ও স্টলে মেশিনারীজ, কার্পেট, কসমেটিক্স এ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্সস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসজ্জা ও গৃহস্থালী সামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারীওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারী, ক্রোকারিজ, প্রাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে।
এবারের আসরে মোট ৩০৪টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও সিঙ্গাপুরের ৯ টি স্টল প্যাভিলিয়নে অংশ নেয়।
এ বছর সেরা স্টল প্যাভিলিয়ন নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৪১টি প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কৃত করা হয়। তার মাঝে ইলেকট্রনিক্স পণ্য ক্যাটাগরিতে পুরস্কার অর্জন করে যমুনা ইলেকট্রনিক্স এন্ড অটো মোবাইল কোম্পানি।